অর্থ পাচারের অভিযোগ নিয়ে বিদেশে পলাতক প্রশান্ত কুমার হালদার ওরফে পি কে হালদারের পাসপোর্ট জব্দ থাকলেও তিনি কীভাবে বিদেশে পালিয়ে গেলেন তা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন হাইকোর্ট। আজ সোমবার হাইকোর্টের বিচারপতি মো. নজরুল ইসলাম তালুকদার ও বিচারপতি মহি উদ্দিন শামীমের সমন্বয়ে গঠিত ভার্চুয়াল বেঞ্চ প্রশ্ন তোলেন।

হাইকোর্ট পি কে হালদারের মামলার সর্বশেষ অগ্রগতিও জানতে চেয়েছেন হাইকোর্ট। পি কে হালদার যেদিন দেশ ত্যাগ করেছিলেন, সেদিন বিমানবন্দরের ইমিগ্রেশনের দায়িত্বরতদের এবং দুদকের দায়িত্বে কে কে ছিলেন তার তালিকাও আদালতে দাখিল করতে বলেছেন আদালত।

বাংলাদেশ ব্যাংকের তিনটি বিভাগে ২০০৮ সাল থেকে কর্মরতদের পূর্ণাঙ্গ তালিকার বিষয়ে কি কি পদক্ষেপ গ্রহণ করা হয়েছে, তা ১৫ মার্চের মধ্যে জানতে চেয়েছেন হাইকোর্ট। আজ সোমবার বাংলাদেশ ব্যাংকের তিনটি বিভাগে ২০১০ সাল থেকে কর্মরত ৩৯৪ জন কর্মকর্তাদের তালিকা হাইকোর্টে দাখিলের পর আদালত বাংলাদেশ ব্যাংকে আরও দুই বছর আগে থেকে কর্মরতদের তালিকাও চেয়েছেন।

আদালতে দুদকের পক্ষে আজ সোমবার শুনানি করেন আইনজীবী মো. খুরশীদ আলম খান। বাংলাদেশ ব্যাংকের পক্ষে ছিলেন ব্যারিস্টার খান মোহাম্মদ শামীম আজিজ। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল এ কে এম আমিন উদ্দিন মানিক, সহকারী অ্যাটর্নি জেনারেল মাহজাবিন রাব্বানী দীপা ও আন্না খানম কলি।

এর আগে গত ২১ জানুয়ারি বাংলাদেশ ব্যাংকের তিন বিভাগে গত ২০০৮ থেকে ২০২০ সাল পর্যন্ত দায়িত্বে থাকাদের নাম, পদবী, ঠিকানা সরবরাহ করতে নির্দেশ দিয়েছিলেন হাইকোর্ট। একইসঙ্গে ওই সময়ে অর্থপাচার রোধে এসব কর্মকর্তাদের ব্যর্থতা আছে কিনা এবং দায়িত্ব পালনে ব্যর্থদের বিরুদ্ধে কোনো পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে কিনা তা আগামী ১৫ ফেব্রুয়ারির মধ্যে বাংলাদেশ ব্যাংককে জানাতে বলা হয়েছিল।

তবে ২০০৮ ও ২০০৯ সালে ম্যানুয়াল সিস্টেম থাকায় তাদের তালিকা প্রণয়নে সময় চেয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক। এ ছাড়া জালিয়াতি ও অর্থ পাচারে ব্যর্থতার বিষয়ে তদন্ত করে দেখা হচ্ছে বলে জানিয়েছে। এ জন্যও তাদের ব্যাংকের সময় প্রয়োজন বলে জানিয়েছে। এ বিষয়গুলো উপস্থাপনের পর আদালত আদেশ দেন বলে জানান ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল এ কে এম আমিন উদ্দিন।

গত বছরের ১৮ নভেম্বর একটি দৈনিকে ‘পি কে হালদারকে ধরতে ইন্টারপোলের সহায়তা চাইবে দুদক’ শীর্ষক প্রকাশিত প্রতিবেদন নজরে নিয়ে গত ১৯ নভেম্বর তাকে বিদেশ থেকে ফেরাতে এবং গ্রেপ্তার করতে কী পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে তা জানতে চেয়ে স্বপ্রণোদিত আদেশ দিয়েছিলেন হাইকোর্ট।ওই আদেশের ধারাবাহিকতায় ২১ জানুয়ারি উক্ত আদেশ দেন হাইকোর্ট।

প্রসঙ্গত, ইন্টারন্যাশনাল লিজিং থেকেই ১ হাজার ৫০০ কোটি টাকা আত্মসাতের অভিযোগ রয়েছে পি কে হালদারের বিরুদ্ধে। এ ছাড়া সব মিলিয়ে প্রায় ৩ হাজার ৫০০ কোটি টাকা তিনি আত্মসাৎ করেছেন বলে বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমে একের পর এক সংবাদ প্রকাশিত হয়। এ সময় গোপনে কানাডায় পাড়ি জমান তিনি। এরপর দীর্ঘদিন সেখানে অবস্থান শেষে পিকে হালদার দেশে ফিরতে চান।

সেই আবেদনে বলা হয়, পিকে হালদার দেশে ফেরার জন্য নিরাপত্তা চান। বিনিয়োগকারীদের অর্থ পরিশোধ করতেই তার এই উদ্যোগ বলে আবেদনে উল্লেখ করা হয়।

Leave comment

Your email address will not be published. Required fields are marked with *.