কুড়িগ্রামে ফের বাড়ছে নদ-নদীর পানি, এবার বড় বন্যার আশঙ্কা
জেলায় অস্বাভাবিকভাবে ব্রহ্মপুত্র, ধরলা, তিস্তা, দুধকুমারসহ ১৬টি নদ-নদীর পানি বৃদ্ধি অব্যাহত রয়েছে। ধরলা ও তিস্তার পানি বিপদসীমার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। দ্রুত গতিতে বাড়ছে ব্রহ্মপুত্রসহ অন্যান্য নদ-নদীর পানিও। এ অবস্থায় আবহাওয়া দফতরের তথ্য অনুযায়ী জেলার বড় ধরনের বন্যার আশঙ্কা করছে পানি উন্নয়ন বোর্ড ও জেলা প্রশাসন।
শনিবার (১১ জুলাই) বন্যা পরিস্থিতি মোকাবিলায় চলছে জরুরি সভাও। প্রথম দফা বন্যার রেশ কাটতে না কাটতেই দ্বিতীয় দফা বন্যার কবলে পড়ায় দুঃশ্চিন্তায় পড়েছেন চরাঞ্চলসহ নদ-নদীর অববাহিকায় বসবাসকারী মানুষজন।
কুড়িগ্রাম পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. আরিফুল ইসলাম জানান, শনিবার বিকেল ৩টায় পাওয়া তথ্য অনুযায়ী ধরলার পানি সেতু পয়েন্টে বিপদসীমার ৭ সেন্টিমিটার ও তিস্তা নদীর পানি কাউনিয়া পয়েন্টে বিপদসীমার ২ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। এছাড়া ব্রহ্মপুত্রের পানি চিলমারী পয়েন্টে বিপদসীমার ৮ সেন্টিমিটার ও নুনখাওয়া পয়েন্টে বিপদসীমার ১৪ সেন্টিমিটার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।
তবে ধরলার পানি অস্বাভাবিক হারে বৃদ্ধি পাওয়ায় রাজারহাট উপজেলার ছিনাই ইউনিয়নের কালুয়া এলাকার বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধ হুমকিতে পড়েছে। ধরলা ও তিস্তা নদীর অববাহিকায় বন্যা পরিস্থিতির অবনতি হবে বলেও জানান পাউবোর নির্বাহী প্রকৌশলী।
এদিকে পানি বৃদ্ধি পেয়ে নদ-নদীর অববাহিকার নিম্নাঞ্চল ও চরাঞ্চলগুলোতে পানি ঢুকে পড়েছে। উলিপুর উপজেলার বেগমগঞ্জ ইউনিয়নের ইউনুছ আলী জানান, বন্যা শেষ না হতেই আবারও বাড়িতে পানি ঢুকে পড়ছে। এমনিতেই অবস্থা খারাপ হয়ে পড়েছে। বন্যা দীর্ঘ হলে কষ্টের শেষ থাকবে না।
উলিপুর উপজেলার বেগমগঞ্জ ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান মো. বেলাল হোসেন জানান, গত মাসের ২৪ জুন থেকে বন্যা শুরু হয়েছে। সেই বন্যার পানি এখনও পুরোপুরি নেমে যায়নি। তার উপর আবারও পানি বৃদ্ধি পাচ্ছে। পানি আরও বৃদ্ধি পেয়ে বন্যা দীর্ঘায়িত হলে চরম দুর্ভোগে পড়তে হবে চরবাসীদের।
কুড়িগ্রামের জেলা প্রশাসক মো. রেজাউল করিম বলেন, ‘কুড়িগ্রামের বন্যা পরিস্থিতি নিয়ে জরুরি সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। সভায় বন ও পরিবেশ মন্ত্রণালয়ের সচিব জিয়াউল হাসান উপস্থিত ছিলেন। ইতিমধ্যে আমরা বন্যা পরিস্থিতি মোকাবিলায় সকল প্রস্তুতি সম্পন্ন করেছি। জরুরি সভায় জেলা ও সব উপজেলার কর্মকর্তাদের নির্দেশ দিয়ে প্রস্তুত করে রেখেছি। বন্যায় যখন যা প্রয়োজনীয়তা দেখা দিবে তাই করা হবে।’