অন্তু আহমেদ: ‘দি ব্রেভ গার্লস’ গত ২৫ নভেম্বর থেকে জেন্ডার ভিত্তিক সহিংসতা রোধের উদ্দেশ্যে “সিক্সটিন ডেইস অ্যাক্টিভিজম: লেটস স্পিক আপ” ক্যাম্পিং করে আসছে। ক্যাম্পেইনের একটি কর্মসূচি বিষয় ভিত্তিক আলোচনা সভা। এছাড়াও ক্যাম্পিনং এর কর্মসূচিতে থাকছে; স্টোরি টেলিং সেশন, প্রবন্ধ প্রতিযোগিতা, বিশেষ আলোচনা সিরিজ। বিষয়ভিত্তিক আলোচনা সভার তৃতীয় পর্বে অতিথি হিসেবে ছিলেন ট্রাভেলেটস অফ বাংলাদেশ পাবলিক রিলেশন সেক্রেটারি মুশফিকা রহমান নিঝুম, খুলনা মাস্টার মাইন্ড স্কুলের সহকারী শিক্ষিকা সুমাইয়া সাফাত। অনুষ্ঠান পরিচালনা এবং উপস্থাপনা করেন ইয়ুথ অ্যাড মিনিস্ট্রেটর অফ দি ব্রেভ গার্লস এর রেনেকা আহমেদ অন্তু।

অনুষ্ঠানের শুরুতে উপস্থাপক রেনেকা আহমেদ অন্তু পর্বের “আমি নারী,আমিও পারি” নামকরনের পেছনের গল্পটি তুলে ধরেন। তিনি জানান, আমাদেও এই উপমহাদেশে নারীদেও ভ্রমণের ক্ষেত্রে কোন পুরুষ সঙ্গী থাকলে তা নিরাপদ বলে ভাবা হয়। ভ্রমণ একটি বিনোদন মাধ্যম। যেকোনো ব্যক্তি ভ্রমণকে উপভোগ করতে পারে, ভালবাসতে পারে। একাজে অহেতুক কারো উপর কোন নির্ভরশীলতা কুসংস্কারের সামিল। নারীরা চাইলে একাও ভ্রমণ করতে পারে। শুধুমাত্র জেন্ডার বৈষম্যেও কারণে নারীদেও ভ্রমণের ইচ্ছা থেকে পিছিয়ে রাখা এক ধরনের ভয়ংকর জেণ্ডারভিত্তিক শোষণ। ভ্রমণের ক্ষেত্রে নিরাপত্তার দোহাই দিয়ে নারীদের ঘরবন্ধী করে না রেখে আমাদের সকলের উচিত, আমাদের দেশকে সকল জায়গা ভ্রমন উপযোগী নিরাপদ করে তোলা।

সুমাইয়া সাফাত বলেন, “আমাদের দেশের বেশির ভাগ নারী লেখাপড়া শেষ করার পর চাকরি করার জন্য পরিবার থেকে সম্মতি পায় না। যদি সম্মতি পেয়ে থাকে তবেও তাদের অনেক কেউ শিক্ষকতা কিংবা ঘওে করার উপযোগী এমন কোন কাজকেই পেশা হিসেবে বেছে নিতে হয়। তিনি আরও বলেন, “আমরা প্রতিনিয়তই আমাদের জীবনে নানা ধরনের হয়রানির শিকার হই। তাই প্রত্যেক নারীরই শিশু বয়স থেকেই আত্মরক্ষার প্রশিক্ষণ গ্রহণ করা দরকার।” তিনি বলেন, নারী-পুরুষের মধ্যকার সম্পর্ক হওয়া উচিত সম্মানজনক। আমাদেও সকল লিঙ্গেও মানুষের প্রতি সম্মানসূচক দৃষ্টিভঙ্গি থাকা প্রয়োজন। লিঙ্গ বৈষম্য আমাদেও দেশের উন্নয়নের ক্ষেত্রে বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছে। তৃতীয় লিঙ্গেও মানুষদেও প্রতি আমাদের প্রচলিত যে ধারণা তা আমাদের পরিবর্তন করতে হবে। শৈশব কাল থেকেই আমাদের সন্তানদেরকে মূল্যবোধ এবং সকল লিঙ্গের প্রতি সমান দৃষ্টিভঙ্গির শিক্ষা দিতে হবে।”

ভ্রমণ কন্যা মুশফিকা রহমান নিঝুম বলেন, আমাদের সমাজে নারীরা কোন ভাল কাজ করতে গেলেও তাদের বিভিন্ন ধরনের কটুমন্তব্য কিংবা উদ্ভট পরিস্থিতির সম্মুখীন হতে হয়। অন্যদিকে পুরুষেরা কোন ভুল করলেও তা সেভাবে গণ্য হয় না। একটি মানুষকে তাঁর কাজের দ্বারা বিচার করা উচিত তার লিঙ্গেও ভিত্তিতে নয়। নারীরা প্রতিনিয়ত রাস্তাঘাট, কর্মস্থল কিংবা তার পরিবারে সহিংসতার শিকার হন। নারীকে নারী নয় ,মানুষ হিসেবে চিন্তা করতে হবে। তবেই এ শোষনের অবসান ঘটবে।

Leave comment

Your email address will not be published. Required fields are marked with *.