বিশ্বব্যাপী চলমান মহামারি করোনাভাইরাস সংক্রমণের কারণে সব প্রস্তুতি সম্পন্ন হওয়ার পরও সরকারি ও বেসরকারি ব্যবস্থাপনায় যারা চলতি বছর হজে যেতে পারেননি, তাদের জন্য জমাকৃত টাকা ফেরত নেয়ার সুযোগ দিয়েছিল ধর্ম বিষয়ক মন্ত্রণালয়। তবে মন্ত্রণালয়ের ওই বিজ্ঞপ্তিতে তেমন সাড়া মেলেনি।

জানা গেছে, সরকারি ও বেসরকারি ব্যবস্থাপনায় যে ৬৪ হাজারেরও বেশি হজযাত্রী টাকা জমা দিয়েছিলেন তাদের প্রায় ৯৮ শতাংশ হজযাত্রী টাকা ফেরত নেয়ার জন্য আবেদনই করেননি। মাত্র দুই শতাংশের কিছু বেশি হজযাত্রী টাকা তুলে নিয়েছেন।

ধর্ম মন্ত্রণালয়ের একাধিক সূত্র জানায়, যেসব হজযাত্রী টাকা উত্তোলন করেননি তারা আগামী বছর অর্থাৎ ২০২১ সালে হজ পালনে অগ্রাধিকার পাবেন। আর যারা টাকা উত্তোলন করে ফেলেছেন তারা আগামী বছর হজে যেতে চাইলে নতুন করে রেজিস্ট্রেশন করতে হবে।

চলতি বছর অর্থাৎ সদ্যসমাপ্ত পবিত্র হজ পালনের জন্য এবার বাংলাদেশ থেকে বেসরকারি ব্যবস্থাপনায় এক লাখ ২০ হাজার এবং সরকারি ব্যবস্থাপনায় ১৭ হাজারসহ মোট এক লাখ ৩৭ হাজার ১৯৮ জনের কোটা নির্ধারিত ছিল। প্রায় দুই লাখ মানুষ প্রাক-নিবন্ধন করেন। তবে প্রাক-নিবন্ধন করার পর নতুন বছরের (২০২০ সাল) দুই মাস পার না হতেই বিশ্বব্যাপী করোনাভাইরাসের সংক্রমণ শুরু হলে করোনার কারণে হজ অনুষ্ঠিত হবে কি হবে না, এ নিয়ে অনিশ্চয়তায় রেজিস্ট্রেশনে ভাটা পড়ে।

দোটানার কারণে শেষ পর্যন্ত বেসরকারি ব্যবস্থাপনায় ৬১ হাজার ১৪২ জন ও সরকারি ব্যবস্থাপনায় তিন হাজার ৪৫৭ জন চূড়ান্তভাবে নিবন্ধন করেন। তারা শেষ পর্যন্ত আশায় বুক বেঁধেছিলেন তারা এ বছর হজে যেতে পারবেন। কিন্তু সৌদি আরবেও করোনার সংক্রমণ ও মৃত্যু বৃদ্ধি পাওয়ায় সৌদি সরকার একেবারে সীমিত পর্যায়ে প্রয়োজনীয় স্বাস্থ্যবিধি মেনে হজ আয়োজনের সিদ্ধান্ত নেয়। সৌদি আরবে অবস্থানরত মাত্র সহস্রাধিক মানুষকে হজ পালনের সুযোগ দেয়া হয় এবং গত ৩১ জুলাই হজ পালিত হয়।

হজ শেষ হওয়ার পর ধর্ম মন্ত্রণালয় এক বিজ্ঞপ্তিতে জানায়, সরকারি ও বেসরকারি উভয় ব্যবস্থাপনায় হজের জন্য নিবন্ধন করেছেন তারা ইচ্ছে করলে আবেদনসাপেক্ষে টাকা তুলে নিতে পারবেন।

হজ অফিস ঢাকার পরিচালক সাইফুল ইসলাম জানান, ধর্ম মন্ত্রণালয়ের বেঁধে দেয়া সময়ের মধ্যে সরকারি ব্যবস্থাপনার তিন হাজার ৪৫৭ জনের মধ্যে মাত্র ২৭৯ জন এবং বেসরকারি ব্যবস্থাপনার ৬১ হাজার ১৪২ জনের মধ্যে মাত্র এক হাজার ৩১৫ জন টাকা ফেরত চেয়ে আবেদন করেন এবং টাকা উত্তোলন করে নেন। তিনি জানান, যারা টাকা উত্তোলন করেননি তারা সকলেই আগামী বছর হজে যেতে চান।

টাকা জমা দিয়েও যারা চলতি বছর হজে যেতে পারেননি তাদের কয়েকজন জাগো নিউজকে জানান, তারা হজে যাওয়ার নিয়ত করেই টাকা জমা দিয়েছেন। এখন টাকা তুলে নিলে খরচ হয়ে যাবে। আল্লাহ বাঁচিয়ে রাখলে আগামী বছর হজে যাবেন। এজন্য টাকা উত্তোলনের জন্য আবেদন করেননি তারা।

‘যারা টাকা উত্তোলন করেননি, তারা হজে যাওয়ার ক্ষেত্রে আগামী বছর অগ্রাধিকার পাবেন। আর যারা টাকা তুলে ফেলেছেন তাদের নতুন করে প্রাক-নিবন্ধন ও নিবন্ধন করে যেতে হবে’, যোগ করেন হজ অফিস ঢাকার পরিচালক সাইফুল ইসলাম।

Leave comment

Your email address will not be published. Required fields are marked with *.