‘আমি বোর্ডের কাছে বিনীতভাবে একটি অনুরোধ করেছিলাম। কিন্তু তারা সেটা রাখেনি। এ মুহূর্তে আমি শুধু এটুকুই বলতে পারি। ন্যায় অবশ্যই মিলবে’- শ্রীলঙ্কা ক্রিকেট দলের ব্যাটিং কোচ হওয়ার তিনদিনের মাথায় নিজের টুইটার প্রোফাইলে এ বার্তা দিয়েছেন কিংবদন্তি বাঁহাতি পেসার চামিন্দা ভাস।

এর পেছনের কারণ হলো, জাতীয় দলের ব্যাটিং কোচের দায়িত্ব থেকে তার পদত্যাগ। গত শুক্রবার (১৯ ফেব্রুয়ারি) ওয়েস্ট ইন্ডিজ সফরের জন্য জাতীয় দলের বোলিং কোচ হিসেবে দায়িত্ব পেয়েছিলেন ভাস। কিন্তু মাত্র তিন দিনের মাথায় সোমবার এই পদ ছেড়ে দেয়ার ঘোষণা দিয়েছেন তিনি। কারণ খোলাসা করেননি। শুধু ছোট্ট টুইটে জানিয়েছেন উপরোক্ত কথাগুলো।

ভাস নিজ থেকে কিছু না খোলাসা না করলেও, লঙ্কান ক্রিকেট বোর্ডের দাবি, পারিশ্রমিক প্রসঙ্গে মতের মিল না হওয়ার কারণেই মূলত চাকরি ছেড়ে দিয়েছেন ভাস। করোনাকালীন সময়ে একটি সফরের আগ দিয়ে ভাসের এমন সিদ্ধান্ত দেশের ক্রিকেটকে জিম্মি করে রাখার শামিল বলে মনে করছে লঙ্কান বোর্ড।

গত বৃহস্পতিবার (১৮ ফেব্রুয়ারি) শ্রীলঙ্কার বোলিং কোচের দায়িত্ব থেকে পদত্যাগ করেছিলেন তখনকার কোচ ডেভিড সাকের। একদিন পরই তার জায়গায় দায়িত্ব দেয়া হয় ভাসকে। কিন্তু ভাসের সঙ্গে বোর্ডের সম্পর্ক টিকল মাত্র তিন দিন।

লঙ্কান বোর্ডের সংবাদ বিবৃতি মোতাবেক, সাকেরের সমান পারিশ্রমিক দাবি করেছিলেন ভাস। যা দিতে রাজি হয়নি বোর্ড। আর এ কারণেই জাতীয় দলের ওয়েস্ট ইন্ডিজ সফরের ঠিক আগ দিয়ে মাত্র তিন দিনেই চাকরি ছেড়ে দিয়েছেন ভাস। এখন ভাসের জায়গায় নতুন বোলিং কোচ নিয়োগ দেয়ার বিষয়টিকে সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিচ্ছে লঙ্কান বোর্ড। কিন্তু তাদের হাতে সময় নেই বললেই চলে।

বিবৃতিতে লঙ্কান বোর্ড ভাসের এমন সিদ্ধান্তে হতাশা প্রকাশ করে লিখেছে, ‘পুরো বিশ্ব যখন অর্থনৈতিক সংকটের মধ্য দিয়ে যাচ্ছে, তখন ভাস ব্যক্তিগত আর্থিক লাভের চিন্তা থেকে দল দেশ ছাড়ার আগ মুহূর্তে হুট করে দায়িত্বজ্ঞানহীন এক সিদ্ধান্ত নিলেন, যা খুবই হতাশাজনক।’

তারা আরও লিখেছে, ‘এসএলসি ম্যানেজমেন্ট এবং পুরো জাতি ভাসকে ক্রিকেটার হিসেবে সম্মান করেছে। তিনি দেশের হয়ে শ্রেষ্ঠত্ব অর্জন করেছেন। তার অবদান বছরের পর বছর ধরে প্রশংসিত হয়েছে। এটা খুবই হতাশাজনক যে এমন পরিস্থিতিতে চামিন্দা ভাসের মতো কিংবদন্তি শেষ সময়ে পদত্যাগপত্র জমা দিয়ে প্রশাসন, ক্রিকেটার, প্রকৃতপক্ষে ক্রিকেটকে জিম্মি করেছেন। পারিশ্রমিক বাড়ানোর তার অযৌক্তিক দাবি প্রশাসন গ্রহণ করেনি। তিনি এখনও অভিজ্ঞতা, যোগ্যতা ও দক্ষতার বিচারে পারিশ্রমিক পাচ্ছেন। এছাড়াও তিনি ভ্রমণকারী দলের সকল সদস্যকে দেওয়া প্রতি ডলারের একটি অংশ পেতেন।’

উল্লেখ্য, এর আগে তিনবার শ্রীলঙ্কার বোলিং কোচের দায়িত্ব পালন করেছেন ভাস। ২০১৩ ও ২০১৫ সালের পর অস্থায়ীভাবে ছিলেন ২০১৭ সালে। এবার জাতীয় দলের দায়িত্ব নেওয়ার আগে শ্রীলঙ্কার হাই-পারফরম্যান্স সেন্টারে পেস বোলিং কোচ ছিলেন তিনি। সেখানে কাজ করেছেন ইমার্জিং দল ও জাতীয় দলের ক্রিকেটারদের সঙ্গে।

Leave comment

Your email address will not be published. Required fields are marked with *.